ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ কেন্দ্র আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে আগামী এক মাসের মধ্যে সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করার আশ্বাস দিয়েছেন রেল মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে কর্মকর্তাদের দ্রুত কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশ পরিদর্শনে যাওয়ার আগে আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে উপস্থিত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। এসময় তিনি আশুগঞ্জ স্টেশনের বর্তমান অবস্থা ঘুরে দেখেন এবং কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সিগন্যাল ব্যবস্থার অচলাবস্থার কারণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত হন।
রেল উপদেষ্টা বলেন, আশুগঞ্জ স্টেশন পূর্বাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রেল জংশন। এখানে আধুনিক সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু হলে ট্রেন চলাচলে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দুটোই বাড়বে। স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি সরকার আন্তরিক।
পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে ছিলেন রেলওয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. দিদারুল আলম, জেলা পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক, আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী শাহজাহান সিরাজ, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন, আশুগঞ্জ শহর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম হোসেন ইপটি এবং ঐক্যবদ্ধ আশুগঞ্জের স্বেচ্ছাসেবীরা।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে তিনটি আন্তঃনগর ও দুটি কমিউটার ট্রেনসহ বেশ কয়েকটি মেইলট্রেন যাত্রা বিরতি করে। এই রেলস্টেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজার হাজার লোকজন ঢাকা-সিলেট-চট্টগ্রাম-নোয়াখালিসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। যা থেকে সরকার বিপুল পরিমানে রাজস্ব পাচ্ছে। এই রেলস্টেশনটিতে প্রায় আট বছর আগে ‘বি’ গ্রেডের স্টেশন হিসেবে সকল সুযোগ সুবিধা ও যাত্রীসেবার মান বিদ্যমান ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনটিকে “ডি”-গ্রেডে অবনমিত করা হয়। প্রয়োজনীয় লোকবল, সিগন্যালিং ব্যবস্থাসহ সকল সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দেয়া হয়। যার কারনে এই স্টেশন থেকে চলাচলকারী যাত্রীরা পড়েন চরম দূর্ভোগে। প্রতিদিন ঘটছে ছিনতাই, চুরির মত ঘটনা। অন্যদিকে সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু না থাকায় প্রতিদিন যাত্রীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি লোকো মাস্টার তাদের ইচ্ছামত চালাচ্ছেন ট্রেন। এতে প্রায়ই যাত্রীরা ট্রেনে উঠতে গিয়ে দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের সিগন্যাল ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে অচল থাকায় ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি ও ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, যাত্রী ও সাধারণ মানুষ বারবার এ সমস্যার সমাধান দাবি করে আসছিলেন। উপদেষ্টার এই আশ্বাসে আশুগঞ্জবাসীর মধ্যে নতুন করে আশা জেগেছে যে, দ্রুতই সিগন্যাল ব্যবস্থা সচল হয়ে নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রেল চলাচল নিশ্চিত হবে।